খুশকির সমস্যায় নারী-পুরুষে ভেদ নেই। খুশকি নিয়ে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী কিংবা যুবক-যুবতী—সবাইকে দেখা যায় উশখুশ করতে। শুধুমাত্র শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়াতেই নয়, মাত্রাতিরিক্ত দূষণের ফলে এখন অনেকেই মোটামুটি সারা বছর খুশকির সমস্যায় ভোগেন। খুশকির জন্য আরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত চুল ঝরে যাওয়া, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, মাথার ত্বকে (স্ক্যাল্প) নানা রকমের সংক্রমণে জন্যেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়ি এই খুশকি।চুলের খুশকি নিয়ন্ত্রণে রাখাটা অনেকের কাছেই যেন অসাধ্য! কিন্তু নানা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ঘরে বসেই বেয়াড়া খুশকির লাগাম টেনে ধরতে পারেন আপনি। ১) টকদই: খুশকির সমস্যা থেকে বাচঁতে টকদই অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। খুশকি দূর করতে মাথার ত্বকে টকদই দিয়ে ভালভাবে মালিশ করুন। এর পর মিনিট দশেক রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। খুশকির সমস্যা পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত দু’বার এই ভাবে চুলে টকদই ব্যবহার করে দেখুন। উপকার পাবেন। ২) মেথি: ২-৩ চামচ মেথি সারারাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে নিয়ে ভাল করে বেটে নিন। ছেঁকে নেওয়া জল ফেলে দেবেন না। এ বার মেথি বাটা চুলের গোঁড়ায় মাথার ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিয়ে ঘণ্টা খানেক রেখে দিন। এর পর শুকিয়ে গেলে চুল ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। চুল ধোয়ার পর মেথি ভেজানো জল দিয়ে আরও একবার চুল ধুয়ে নিন। এ ভাবে সপ্তাহে দু’বার মেথি ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা দ্রুত দূর হবে। ৩) লেবুর রস: ২ চামচ পাতি লেবুর রস সামান্য জলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ভালভাবে মালিশ করুন। মিনিট পাঁচেক চুলের গোড়ায় ভালভাবে মালিশ করার পর চুল ধুয়ে নিন। খুশকির সমস্যা পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত ২ বার এই ভাবে পাতি লেবু ব্যবহার করে দেখুন। ফল পাবেন হাতেনাতে। ৪) রিঠা: চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে রিঠা অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। খুশকির সমস্যা দূর করতেও এটি অত্যন্ত কার্যকর! রিঠা পাউডার বা রিঠা সিদ্ধ জল দিয়ে চুল ভিজিয়ে ঘণ্টা খানেক রেখে দিন। চুলের গোড়ায় গোড়ায় রিঠার জল ভালমতো লাগলে তবেই ফল পাওয়া যাবে। ঘণ্টা খানেক পর চুল ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহে ২-৩ বার রিঠা ভেজানো জল মাথায় মাখলে খুশকির সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ৫) নারকেল তেল: নারকেল তেল চুলের যে কোনও সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য উপাদান। খুশকির প্রকোপ কমাতেও এই অত্যন্ত কার্যকর। এ ছাড়া চুলে গোড়ার আদ্রতা বজায় রেখে খুশকি এবং ‘স্ক্যাল্প ইনফেকশন’-এর আশঙ্কাও অনেকটাই কমিয়ে দেয়। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার চুলের গোড়ায় সামান্য উষ্ণ নারকেল তেলের মালিশ করলে ফল পাবেন হাতেনাতে। ৬) পেঁয়াজের রস: ২ পেঁয়াজ ভাল করে বেটে ১ মগ জলে মিশিয়ে নিন। এ বার পেঁয়াজের রস মেশানো ওই জল মাথায় লাগিয়ে ভাল করে মালিশ করুন। কিছু ক্ষণ পর উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার পেঁয়াজের রস মাথার ত্বকে মাখলে খুশকির সমস্যায় দ্রুত উপকার পাবেন। ৭) ঘৃতকুমারীঃ খুশকি ভরা মাথায় ঘৃতকুমারীর রস মেখে নিলে দারুণ আরাম পাবেন। খুশকির জ্বালায় দিনরাত চুলকানো থেকে খানিকটা ছুটিও দেবে ঘৃতকুমারীর রসের শীতল আরাম। এই উদ্ভিদ রসের সমৃদ্ধ উপাদানগুলো আপনার ত্বকের অনেক সমস্যাই দূর করবে। ৮) মেথি-তেলঃ সাধারণ নারকেল তেলের সঙ্গে মেথি মিশিয়ে কয়েকদিন বোতলে রেখে দিন। নিয়মিত এই মেথি মেশানো তেল মাখুন মাথায়। রাতে মেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহারে মাথার চুল ও ত্বক দুইই ভালো থাকবে। খুশকি থেকেও রেহাই পাবেন।
Latest Posts
-
চুলের যত্ন
4 May 2021
-
খুশকি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
8 May 2021
-
গর্ভকালীন যত্ন
8 May 2021
-
শিশুর ত্বকের যত্নে তেল মালিশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ
10 May 2021
-
নবজাতকের যত্ন
10 May 2021